পৃথিবীতে, বর্তমানে একটি দেশের সামরিক শক্তিতে তার অবস্থান কোথায় তা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সামরিক সুপার পাওয়ার শুনলেই আমাদের সবার মনে প্রথমেই আসে,
আমেরিকা, রাশিয়া , চীন, ভারত, মতো সব দেশের নাম। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ – মায়ানমারের সীমান্তে বেশ কিছু সামরিক উত্তেজনা
দেখা দিয়েছে।
দেশটিতে চলা জান্তা ও বিদ্রহীদের যুদ্ধের আঁচ এসে লাগছে বাংলাদেশেও। যদিও বাংলাদেশ পররাষ্ট্র নীতি “সবার সাথে বন্ধুত্ব”
এই শর্তে চললেও, এই মুহূর্তে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের সামরিক শক্তি, পার্থক্য ও অবস্থান নিয়ে চলছে বেশ অলোচনা।
বিশ্বের কোন দেশের সামরিক শক্তি বা অবস্থান কোথায় বা কতটুকু সে বিষয়ে প্রতি বছর একটি তালিকা প্রকাশ করে থাকে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক
প্রতিষ্ঠান - গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার।
এক্ষেত্রে একটি দেশের জনসংখ্যা, সামরিক সরঞ্জাম, অর্থনৈতিক অবস্থান সহ, এছারা আরো ৬০ টির বেশি বিষয় বিবেচনা করা হয়।
“গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্স” ২০২৪ সালে তাদের যে তালিকা প্রকাশ করেছে, সেখান থেকে বাংলাদেশ ও মায়ানমারের সামরিক শক্তির অবস্থান
সম্পর্কে একটি অতি সম্প্রতিক ধারনা পাওয়া যায়।
শুরুতেই দেখা যায় জনসংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ বেশ এগিয়ে থাকলেও সামরিক দিক থেকে কিন্তু একটু পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ।
গ্লোবাল ফায়ার – ইনডেক্স ২০২৪ অনুসারে বর্তমানে বিশ্বে সামরিক শক্তিতে মিয়ানমারের অবস্থান ৩৫ তম ( পঁয়ত্রিশ তম )।
আর, বিশ্বে সামরিক শক্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান ঠিক দুইধাপ পিছনে ৩৭ তম।
সৈন্য সংখ্যার দিক থেকে মিয়ানমারের তুলনায় বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে বেশ ।
বর্তমানে বাংলাদেশে’র সামরিক বাহিনীতে নিয়মিত সৈন্য সংখ্যা রয়েছে প্রায় এক লাখ তেষট্টি হাজার
(১,৬৩,০০০); সেখানে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীতে নিয়মিত সৈন্য সংখ্যা রয়ছে প্রায় দের লাখ (১,৫০,০০০)
এছাড়াও, আধা সামরিক বাহিনীতেও বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে।
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার – অনুসারে, র্যাংকিং এ পিছিয়ে থাকলেও,মায়ানমারের তুলনায় বাংলাদেশের
প্রতিরক্ষা বাজেট কিন্তু অনেক, যা প্রায় ৬,৯৯ কোটি, মার্কিন ডলার।
অথচ, মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা বাজেট মাত্র ২৭০ কোটি, মার্কিন ডলার।
যা, বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাজেট এর অর্ধেকেরও কম।
প্রতিরক্ষা বাজেট, সৈন্য সংখ্যায় এগিয়ে থাকলেও, যুদ্ধ বিমান এর সংখ্যায় বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে বা কম রয়েছে।
গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ২০২৪ এর প্রতিবেদন অনুসারে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর কাছে সব মিলিয়ে ২১৬ টি বিমান রয়েছে,
যেখানে যুদ্ধ বিমান রয়েছে মাত্র ৪৪ টি।
অন্যদিকে মিয়ানমারের বিমান বাহিনীর কাছে মোট বিমান রয়েছে এবং যুদ্ধ বিমান আছে মোট ৫৮ টি।
হেলিকাপ্টর এর দিক থেকেও মিয়ানমার এগিয়ে যেখানে বাংলাদেশের আছে ৭৩ টি এবং মিয়ানমারের রয়েছে ৮০ টি হেলিকাপ্টর।
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট ৩২০ টি ট্যাঙ্ক আছে।
অন্যদিকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীতে এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ যা ৭০৫ বা তার বেশী।
সাঁজোয়া যান এর সংখ্যায় কিন্তু এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
প্রতিবেদন অনুসারে বাংলাদেশের কাছে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ১০০ টির বেশি সাঁজোয়া যান রয়েছে।
অন্যদিকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীতে সাঁজোয়া যান রয়েছে ৮ হাজার ১৪০ টি প্রায়।
কামান এর সংখ্যার দিক থেকেও বাংলাদেশের চেয়ে মিয়ানমার বেশ এগিয়ে আছে।
প্রতিবেদন অনুসারে দেশটির সামরিক বাহিনীতে দুই হাজারেরও বেশি কামান রয়েছে, যেখানে ২১৫ টি স্বয়ংক্রিয় কামান।
অথচ, বাংলাদেশের কাছে কামান রয়েছে মাত্র ৪৬৪ টি যেখানে স্বয়ংক্রিয় কামান আছে মাত্র ২৭ টি।
মোবাইল রকেট প্রজেক্টর এর দিক থেকেও মিয়ানমারের থেকে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।
মোবাইল রকেট প্রজেক্টর – হলো এমন একটি সামরিক প্রযুক্তিগত অস্ত্র, যেটি দিয়ে, একসাথে অনেকগুলো বমা নিক্ষেপ করা যায়।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কাছে ৫৮০ টির ও বেশি মোবাইল রকেট প্রজেক্টর রয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর
কাছে মোবাইল রকেট প্রজেক্টর রয়েছে মাত্র ৭১ টি।
এখানেও বাংলাদেশের চেয়ে বেশ এগিয়ে রয়েছে মিয়ানমার, প্রতিবেদন অনুসারে দেশটির নৌ বাহিনীর আছে বিভিন্ন ধরণের
মোট ৩৬২ টির ও বেশি জাহাজ রয়েছে যার মধ্যে যুদ্ধ জাহাজ রয়ছে ২৩৮ টি।
অন্যদিকে, বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর কাছে জাহাজ রয়েছে প্রায় ১৯০ টি যেখানে যুদ্ধ জাহাজ রয়েছে প্রায় ১৪৫ টি।
সাবমেরিনের সংখ্যায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার কাছে যথাক্রমে ২ টি ও ৩ টি রয়েছে।
অর্থাৎ, মিয়ানমারের রয়েছে ৩ টি, সাবমেরিন ও বাংলাদেশের রয়েছে ২ টি।
বিমান বাহী রণতরী
বাংলাদেশ এবং মিয়ানমার কারো কাছেই কোন বিমান বাহী রণতরী নেই।
লেখা টির তথ্য উপাত্ত, গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্স ওয়েবসাইট থেকে নেয়া হয়েছে, ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ের প্রকাশিত রিপোর্ট, লেখা থেকে রেফারেন্স নেয়া হয়েছে।
In the world, the position of a country in terms of its military power is crucial. When we hear about military superpowers, names like the United States, Russia, China, India, and others come to mind. However, in recent times, there have been some military tensions observed along the Bangladesh-Myanmar border.
Despite Bangladesh's foreign policy of "friendship to all," there has been considerable discussion regarding the military power, disparity, and positioning between Bangladesh and Myanmar at this moment.
The Global Firepower Index, which publishes an annual list of countries' military power or position, considers factors such as population, military equipment, economic status, and more than 60 other factors.
The "Global Firepower Index" published in 2024 provides a very recent idea about the military power position of Bangladesh and Myanmar. Initially, Bangladesh appears to be ahead in terms of population, but it lags behind in terms of military aspects.
According to the Global Firepower Index 2024, Myanmar's position in global military power is 35th, while Bangladesh is placed just two steps behind at 37th.
Compared to Myanmar, Bangladesh has more active military personnel. Currently, Bangladesh has about one lakh sixty-three thousand regular military personnel, while Myanmar has nearly ten lakh regular military personnel. Moreover, Bangladesh is ahead even in half of its military force.
According to the Global Firepower Index, despite lagging in ranking, Bangladesh's defense budget is much higher than Myanmar's, which is approximately 6.99 billion US dollars. However, Myanmar's defense budget is only 2.70 billion US dollars, less than half of Bangladesh's defense budget.
Despite Bangladesh's higher defense budget and active military personnel, it lags behind or has fewer warplanes compared to Myanmar. According to the Global Firepower 2024 report, Bangladesh's Air Force has a total of 216 aircraft, with only 44 being combat aircraft. On the other hand, Myanmar has a total of more than 580 aircraft, with 58 being combat planes.
Bangladesh has a total of 320 tanks in its armed forces. In comparison, Myanmar has approximately 705 tanks, which is more than double the number Bangladesh possesses.
Bangladesh has surpassed Myanmar in terms of armored vehicles. According to the report, Bangladesh has more than 13,100 armored vehicles, while Myanmar has around 8,140.
Myanmar leads in terms of artillery compared to Bangladesh. The report states that Myanmar has over 2,000 artillery pieces, with 215 being self-propelled, whereas Bangladesh has only 464 artillery pieces, with only 27 being self-propelled.
Myanmar also leads in the number of mobile rocket projectors. The Myanmar military possesses more than 580 mobile rocket projectors, while Bangladesh has only 71.
Myanmar surpasses Bangladesh in terms of naval forces. The report indicates that Myanmar has over 362 naval vessels, with 238 being warships, while Bangladesh has approximately 190 naval vessels, with around 145 being warships.
Both Bangladesh and Myanmar have submarines, with Bangladesh having 2 and Myanmar having 3.
The information in this article has been sourced from the Global Fire Power Index website, as well as recent published reports. References have been taken from the article itself.